যে চারটি কাজ করলে নারীরা সহজেই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে

আল্লাহ তায়ালা মানবকুলকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। ইবাদতের বিনিময়ে প্রস্তুত রেখেছেন উত্তম পুরস্কার। মানব কুলের জন্য জান্নাতের চেয়ে উত্তম পুরস্কার আর কি হতে পারে। আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে প্রবেশের পথকে সহজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা সহজ ৪টি (পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, রোজা রাখা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, স্বামীর আনুগত্য করা) আমলের বিনিময়ে নারীদেরকে জান্নাত প্রদান করবেন।


যে চারটি আমান এর মাধ্যমে নারী অতি সহজে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে তা নিম্নে হাদিস সহ বর্ণনা করা হলো:-
  1. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। 
  2. রমজানের সিয়াম। 
  3. লজ্জাস্থানের হেফাজত। 
  4. স্বামীর আনুগত্য। 
এই চারটি আমলের বিনিময়ে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪১৬৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৬১)

প্রিয়নবি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের জবান ও যৌনাঙ্গকে হেফাজত করার দায়িত্ব নেবে; আমি তাকে জান্নাতে পৌঁছানোর দায়িত্ব নেব।’ (বুখারি ও মুসলিম)

নারীকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিগত ভাবেই পুরুষের তুলনায় দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন। তাই তাদের উপর কোন কষ্টসাধ্য ও কঠিন দায়িত্বভার অর্পণ করেন নি। আল্লাহ তাআলা ইসলামে নারীদেরকে যে সম্মান দিয়েছেন অন্য কোথাও নারীদেরকে সে সম্মান দেওয়া হয়নি। ইসলামে নারীদেরকে বলা হয় রাব্বাতুল বাইত অর্থাৎ ঘরের রানী। ইসলামে নারীদের সম্মানের পাশাপাশি তাদের জান্নাতে প্রবেশের আমল গুলোকে সহজ করে দিয়েছেন।

হাদিসে এসেছে-হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে। রমজানের রোজা পালন করবে। নিজের ইজ্জতের (সতীত্বের) হেফাজত করবে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করবে। তখন তাকে বলা হবে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে চাও তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (ইবনে মাজাহ)

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রমজানের রোজা কে আল্লাহ তা'আলা মানুষের জন্য আবশ্যক করে দিয়েছেন। নারীরা ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও রমজানের রোজার পাশাপাশি যদি নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে অর্থাৎ লজ্জাস্থানের দ্বারা যে সমস্ত গুনাহ করা সম্ভব সেগুলো থেকে নিজেকে হেফাজত করে। নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখে। 

আর স্বামীর অনুগত্য করা অর্থাৎ স্বামীর যথার্থ হক আদায় করা। স্বামীর আদেশ পালন করা এবং তার নিষেধকৃত ও অপছন্দনীয় কাজগুলো থেকে বিরত থাকা। তাকে তার যোগ্য সম্মান দেওয়া এবং তার মনে কষ্ট না দেওয়া। তার দোষ না খুঁজে তার উপর কৃতজ্ঞতা আদায় করা।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ সেই নারীর প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না, যে স্বামীর কৃতজ্ঞতা আদায় করে না। অথচ সে তার প্রতি মুখাপেক্ষী।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৯০৮৭)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘(একবার) রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো- কোন নারী উত্তম? তিনি বললেন, যার প্রতি দৃষ্টিপাত করলে— সে স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। স্বামী আদেশ করলে, তার আনুগত্য করে, এবং (স্ত্রী) নিজের ব্যাপারে ও তার ধন-সম্পদের ব্যাপারে যা স্বামী অপছন্দ করে, এমন কাজের মাধ্যমে স্বামীর বিরোধিতা করে না। (নাসায়ি, হাদিস : ৩২৩১)

হাদিসে এসেছে-হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো নারী তার স্বামীকে যখনই এই দুনিয়ায় কষ্ট দেয়; তখন জান্নাতের হুরাঈন তথা ডাগর চোখ বিশিষ্ট সুন্দরী হুরদের মধ্য থেকে তার স্ত্রীকে বলে- ‘তাকে কষ্ট দিও না; আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন! (নাউজুবিল্লাহ) সে তো তোমার কাছে একজন আগন্তুক মাত্র। অচিরেই সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের মাঝে চলে আসবে।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তায়ালা নারীদের জাহান্নাম থেকে বাঁচার এবং জান্নাত প্রাপ্তির পথকে এত সহজ করার পরেও, জাহান্নামে নারীদের সংখ্যায় বেশি হবে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে তারা বেশি অস্বীকার করে। তারা মানুষের মধ্যে দোষ ত্রুটি খোঁজে।

হাদিসে এসেছে-হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়েছে। সেখানকার অধিকাংশ অধিবাসী নারী। আর এটা এ কারণে যে তারা অস্বীকার করে। জিজ্ঞাসা করা হলো- তারা কি আল্লাহকে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, তারা তাদের স্বামীদের অবদান অস্বীকার করে। তাদের অবস্থাটা এমন যে, তুমি সারা জীবন তাদের প্রতি দয়াসুলভ আচরণ করে যাচ্ছ আর তোমার কোনো একটি ত্রুটি পেলেই তোমাকে বলবে- তোমার মাঝে আমি কখনোই ভালো কিছু পাইনি।’ (বুখারি)

জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাত পাওয়ার জন্য নারীদের উক্ত আমল গুলোর প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত। আল্লাহ তায়ালা সকল নারীদেরকে উক্ত আমল গুলো করার তৌফিক দান করুন।

লেখকের মন্তব্যঃ পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই আত্মীয় স্বজন দের সাথে সেয়ার করুন। আপনার মাধ্যমে হয়তো একজনেরও ঈমান শক্তিশালী হবে। অন্যের উপকার করা শক্তিশালী মুমিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url