গর্ভাবস্থায় গর্ভের পানির পরিমাণ কত থাকা উচিত জেনে রাখুন

গর্ভাবস্থায় শিশু অ্যামিওনেটিক স্যাক এর মধ্যে বেড়ে ওঠে।গর্ভাবস্থায় গর্ভের পানির পরিমাণ স্বাভাবিক থাকা শিশুর সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় গর্ভের পানিকে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স বলা হয়। গর্ভের পানি শিশুকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে, শিশুর নড়াচড়ায় সাহায্য করে এবং শিশুকে পুষ্টি দেয় । 


গর্ভের পানি শিশুকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সুরক্ষিত রাখে। শিশুর জন্য সহনশীল একটা পরিবেশ তৈরি করে। গর্ভাবস্থায় শিশু এই পানির মধ্যেই মাল-মূত্র ত্যাগ করে আবার এই পানি পান করে। 

তাই গর্ভের পানি অর্থাৎ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স পরীক্ষা করলেই বোঝা যায় শিশুর কোন সমস্যা আছে কিনা? 

গর্ভবতীর গর্ভের মায়ের ফুল থেকে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স নিঃসৃত হয়। অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এক ধরনের পিচ্ছিল পদার্থ। এটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শিশুর হাড়, পেশি ও হাত-পা গঠনে সাহায্য করে। 

এটি বাচ্চা প্রসবণের সময় জরায়ুতে চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রসবণ প্রক্রিয়াকে সহজ করে। অর্থাৎ অ্যামিওনেটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর ওয়াটার ব্রেক হলে শিশু বাইরে বেরিয়ে আসে।

গর্ভাবস্থার সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে অ্যামিওনপটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ এর পরিবর্তন ঘটে থাকে। প্রথম কয়েক মাস ৯৮% থাকে পানি ও মিনারেল আর ২% থাকে পুষ্টি উপাদান, হরমোন ও আন্টিবডি। 

পুষ্টি উপাদানগুলো হলো প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ইত্যাদি। তবে ২০ সপ্তাহের পর অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্সের মধ্যে প্রধানত শিশুর মূত্র থাকে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভের পানির পরিমাণ অর্থাৎ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্সের পরিমাণ কত হওয়া উচিত নিচে দেওয়া হলো-

গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক পানির পরিমাণ অর্থাৎ স্বাভাবিক অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ ৫সেমি থেকে ২৫সেমি। এ পরিমাণের কম বা বেশি হলে শিশু নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অ্যাম নিয়োটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে একে পলিহাইড্রামনিওস বলা হয়। 

আর অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম হলে একে অলিগোহাইড্রামনিওস বলা হয়। বিভিন্ন কারণে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। যেমন: 
  • প্লাসেন্টা স্বাভাবিকভাবে কাজ না করলে।
  • মায়ের শরীরে স্থূলতা, ডিহাইড্রেশন, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি শারীরিক জটিলতা থাকলে।
  • শিশুর কিডনিতে কোন সমস্যা হলে এবং মুত্র ত্যাগে বাধাপ্রাপ্ত হলে।
  • অ্যামনিওটিক স্যাক এর পর্দা ফেটে গেলে।
গর্ভধারণের প্রথম দশ সপ্তাহে ৩০ মিলি, ২০ সপ্তাহে ৩০০ মিলি এবং ৩০ সপ্তাহে ৬০০ মিলি অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স থাকা স্বাভাবিক। 

গর্ভধারণের পর ৩৮ সপ্তাহ পর্যন্ত অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর পরবর্তী সময়ে গর্ভের পানি অর্থাৎ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ কমতে থাকে। 

গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত আল্ট্রাসাউন্ড পদ্ধতির মাধ্যমে বা সাহায্যে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ইনডেক্স এর পরিমাণ পরীক্ষা করা যায়। যাবে ২৪ সপ্তাহের পরের সময় এএফআই এর সাহায্যে অ্যামনিওটিক ইনডেক্স অর্থাৎ গর্ভের পানির পরিমান পরীক্ষা করা হয়।

গর্ভাবস্থায় আমাদের সকলের উচিত গর্ভবতীর প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া। তার শরীরের দিকে লক্ষ্য করা এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন ধারণ করা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url