কুনো ব্যাঙের বৈজ্ঞানিক নাম কি? কুনো ব্যাঙ এর বৈশিষ্ট্য

 কুনোব্যাঙ এর বৈজ্ঞানিক নাম 

কুনো ব্যাঙের বৈজ্ঞানিক নাম Duttaphrynus melanostictus (Bufo melanostictus)  বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকে প্রথম অংশ টি গণ এবং দ্বিতীয় অংশ টি প্রজাতি। কুনো ব্যাঙের বৈজ্ঞানিক নাম Bufo melanostictus এর প্রথম অংশ টি অর্থাৎ Bufo হলো গণ এবং দ্বিতীয় অংশ টি melanostictus- হলো প্রজাতি । সুইডিশ বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম প্রানীর বৈজ্ঞানিক নামকরণের ধারণা দেন।।


তিনিই প্রথম জীবের শ্রেণি, বর্গ, গণ এবং প্রজাতির ধাপগুলো ব্যবহার করেন। এ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিটি জীবের:

  • নামকরণ ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষার মতো করে উপস্থাপন করতে হবে।
  • বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশ টি গণ এবং দ্বিতীয় অংশ টি প্রজাতি।
  • জীব জগতের বৈজ্ঞানিক নাম কে অনন্য (unique) হতে হবে। কারণ, একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহারের অনুমতি নেই।
  • বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর হবে, বাকি অক্ষরগুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশ টির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে। 
  • বৈজ্ঞানিক নাম মুদ্রণের সময় সর্বদা ইতালিক অক্ষরে লিখতে হবে।
  • হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতিক নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে।
  • যদি কয়েকজন বিজ্ঞানী একই জীবকে বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে।
  • যিনি প্রথম কোনো জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম দিবেন, তার নাম প্রকাশের সালসহ উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে। 

কুনোব্যাঙের বৈশিষ্ট্য 

  • দেহত্বক আঁইশ বিহীন। 
  • দেহত্বক নরম পাতলা ভেজা গ্রন্থিযুক্ত। 
  • পায়ে পাঁচটি নখর যুক্ত আঙুল রয়েছে।
  • শীতল রক্তের প্রাণী।

কুনো ব্যাঙ এর শ্রেণিবিন্যাস 

শ্রেণিবিন্যাসের প্রতিটি ধাপে তার আগের ধাপের বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যোগ হয়। যত উপরের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত কম এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা তত বেশি। আবার যত নিচের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত বেশি এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা তত কম। একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত সাতটি ধাপ আছে। 

সেগুলো হলো পর্যায়ক্রমে-

  • রাজ্য (Kingdom)
  • পর্ব (phylum) / বিভাগ (Division) 
  • শ্রেণি (Class)
  • বর্গ (Order)
  • গোত্র (Family)
  • গণ (Genus)
  • প্রজাতি (Species) 

উপরের ধাপ যেন বড় একটা সেট আর তার নিচের ধাপ হলো তার উপসেট। রাজ্যের উপসেট হলো পর্ব, পর্বের উপসেট হলো শ্রেণি, শ্রেণির উপসেট হলো বর্গ, বর্গের উপসেট হলো গোত্র.....ইত্যাদি। শ্রেণিবিন্যাসের এ পদ্ধতি কে বলে নেস্টেড হায়ারার্কি (nested hierarchy)। অনেক  সময় পুনরাবৃত্তি এড়ানোর জন্য আগের ধাপের যেসব বৈশিষ্ট্য পরের ধাপেও থাকে, সেগুলো ঊহ্য রাখা হয়।

এ অনুযায়ী কুনো ব্যাঙের শ্রেণিবিন্যাস হবে এমন-

  • রাজ্য (Kingdom): Animalia; কুনো ব্যাঙ Animalia রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। 
  • পর্ব (Phylum): Chordata; কুনো ব্যাঙ Chordata পর্বের প্রাণী। 
  • শ্রেণি (Class): Amphibia; কুনো ব্যাঙ Amphibia শ্রেণির প্রাণী। 
  • বর্গ (Order): Anura; কুনো ব্যাঙ Anura বর্গের প্রাণী। 
  • গোত্র (Family): Bufonidae; কুনো ব্যাঙ Bufonidae গোত্রের প্রাণী। 
  • গন (Genus): Bufo; কুনো ব্যাঙ এর গণ Bufo। 
  • প্রজাতি (Species): Bufo melanostictus: কুনো ব্যাঙ Bufo melanostictus প্রজাতির প্রাণী।

কুনো ব্যাঙের পরিচিতি

কুনো ব্যাঙ অনেক পরিচিত একটি প্রাণী।। ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিকাংশ দেশে কুনো ব্যাঙের দেখা মিলে। বাড়ির আশেপাশে সর্বত্রই কুনো ব্যাঙের দেখা মিলে। এজন্য আই. ইউ. সি. এন. (IUCNA) কুনো ব্যাঙকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। কুনো ব্যাঙ সাধারণত রাতের বেলা স্বীকার করতে বের হয়।। 

দিনের বেলা ঘরের কোনে অথবা দেয়ালের ফাঁকা জায়গা অথবা মাটির গর্তে বাস করে। তাই এদের কুনো ব্যাঙ বলা হয়। কুনো ব্যাঙ মেরুদন্ডী প্রাণী। কুনো ব্যাঙ সাধারণত ছোট ছোট পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। কুনো ব্যাঙের গায়ে আচিলের মত ছোট ছোট অনেক দাগথাকে। 

এর সাহায্যে কুনো ব্যাঙের সহজেই চেনা যায়। শীতকালে কুনো ব্যাঙ শীত নিদ্রায় চলে যায়। কুনো ব্যাঙ এমন একটি প্রাণী যা দিনে ছয় মাস ঘুমাতে পারে একটানা।

প্রজনন

বর্ষাকাল কুনো ব্যাঙের প্রজনন কাল। যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন কুনো ব্যাঙ তাদের সঙ্গিনীর খোঁজ শুরু করে। তারপর স্ত্রী ব্যাঙের সাথে পুরুষ ব্যাঙের মিলন হয়। কুনো ব্যাঙের বহি নিষেক ঘটে অর্থাৎ শুক্রানু ও ডিম্বানু দেহের বাহিরে মিলিত হয়। স্ত্রী কুনো ব্যাঙ প্রায় ৩০,০০০ ডিম্বানু ছাড়ে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি পোস্ট টি থেকে আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। পোস্ট টি হতে কোনো উপকার পেলে বা পোস্ট টি ভালো লাগলে পরিচিত দের সাথে সেয়ার করুন। আর আপনার কোনো সমস্যা বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আর এমন পোস্ট পেতে অবশ্যই আমাদের গুগলে ফোলো করে রাখুন। 

কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এমন পোস্ট করে থাকি। যা আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি তে ভূমিকা রাখবে। আমরা আমাদের জন্য নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের আর্টিকেলে যদি কোন প্রকার ভুল থাকে তবে তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এর ফলে আমরা পরবর্তীতে সে ভুল সংশোধন করতে পারবো এবং আপনাদের নির্ভুল ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url