শ্বসন কাকে বলে? শ্বসনের প্রকারভেদ, প্রভাবক সমূহ এবং গুরুত্ব | শ্বসন

শ্বসন কাকে বলে? শ্বসনের প্রকারভেদ, প্রভাবক সমূহ এবং গুরুত্ব কী তা নিয়েই থাকছে আজকের আমাদের বিস্তারিত আলোচনা। অতএব বিস্তারিত জানতে পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আপনারা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন।

শ্বসনের সংজ্ঞা

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীব কোষস্থ শর্করা জাতীয় জটিল খাদ্যদ্রব্য অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে জারিত হয়ে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে শ্বসন বলে। 

জীবের জীবন ধারণ অর্থাৎ চলন, ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি, জনন প্রভৃতি কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করার জন্য শক্তি প্রয়োজন হয়। শক্তির প্রধান উৎস হলো সূর্যালোক। সালোকসংশ্লেষণের সময় উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে শর্করা জাতীয় খাদ্য বস্তুর মধ্যে স্থিতিশক্তি রুপে সঞ্চয় করে রাখে। 

খাদ্যের মধ্যে সঞ্চিত এই ধরনের শক্তি তার জীবন ধারণের জন্য সরাসরি ব্যবহার করতে পারেনা। শ্বসনের সময় জীব দেহের এই স্থিতিশক্তি রাসায়নিক শক্তি (ATP) হিসেবে তাপ রুপে মুক্ত হয় এবং জীবের বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়।

শর্করা জাতীয় খাদ্যবস্তু ছাড়াও প্রোটিন, ফ্যাট এবং বিভিন্ন জৈব এসিড শ্বাসনিক বস্তুরূপে ব্যবহৃত হয়। জীবদেহে এই জটিল যৌগগুলো প্রথমে ভেঙ্গে সরল যোগে পরিণত হয় এবং পরে জারিত হয়ে রাসায়নিক শক্তিতে (ATP) রূপান্তরিত হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় জীবদেহের প্রতিটি কোষে দিবারাত্রী ২৪ ঘন্টায় শোষণ চলতে থাকে। 

তবে উদ্ভিদের বর্ধিত অঞ্চলে (ফুল ও পাতার কুঁড়ি, অংকুরিত বীজ, মূল ও কাণ্ডের অগ্রভাগ) শ্বসন ক্রিয়ার হার অনেক বেশি। সজীব কোষের সাইটোপ্লাজমা ও মাইটোকন্ড্রিয়াতে শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীবদেহ যৌগিক খাদ্যদ্রব্য জারিত করে সরল দ্রব্যে পরিণত করে এবং শক্তি উৎপন্ন করে।

শ্বসনের প্রকারভেদ

শ্বসনের সময় অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে শ্বসনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-
  • সবাত শ্বসন
  • অবাত শ্বসন

সবাত শ্বসন

যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু (শর্করা, প্রোটিন, লিপিড, বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড) সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে CO2, H2O এবং বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে সবাত শ্বসন করে।

সবাত শ্বসনই হলো উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বাভাবিক শ্বসন প্রক্রিয়া। সবাত শ্বসনের সামগ্রিক সমীকরণটিতে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, গ্লুকোজ ৬অনু অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ৬অনু কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ৬অনু পানি ও ৩৮টি ATP উৎপাদন করে।

সবাত শ্বসনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

সবাত শ্বসন প্রক্রিয়া সাধারণত চারটি ধাপের সম্পন্ন হয়। ধাপগুলো হলো-
  • ধাপ 1: গ্লাইকোলাইসিস : এই প্রক্রিয়ায় এক অনু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জড়িত হয়ে দুই অনু পাইরুভিক এসিড উৎপন্ন করে। এই ধাপে চার অনু ATP ( এর মাঝে দুই অনু খরচ হয়ে যায়) এবং দুই অনু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ার জন্য কোন অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না, তাই গ্লাইকোলাইসিস সবাত ও অবাত উভয় প্রকার শ্বসনের প্রথম পর্যায়। গ্লাইকোলাইসিসের বিক্রিয়া গুলো কোষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে থাকে।
  • ধাপ 2: অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি : গ্লাইকোলাইসিস পর্যায়ে সৃষ্ট প্রতি অণু পাইরুভিক অ্যাস পর্যায়ক্রমিক বিক্রিয়া শেষে 2 কার্বনবিশিষ্ট এক অণু অ্যাসিটাইল কো এনজাইম-এ (Acetyl Co-A), এক অণু CO2 এবং এক অণু NADH+H+ (অথবা NADH2) উৎপন্ন করে (অর্থাৎ দুই অণু পাইরুভিক এসিড থেকে দুই অণু অ্যাসিটাইল কো এনজাইম-এ,দুই অণু CO2 এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়)।এই ধাপটি সাইটোপ্লাজম ঘটে।
  • ধাপ 3: ক্রেবস চক্র (krebs cycle) : ইংরেজ প্রাণরসায়নবিদ Sir Hans krebs এ চক্রটি আবিষ্কার করেন বলে একে ক্রেবস চক্র বলা হয়। এ পর্যায়ে অ্যাসিটাইল Co-A মাইটোকন্ড্রিয়াতে প্রবেশ চক্রে এক অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে দুই অণু কার্বন ডাই-অক্সাইড,তিন অণু NADH+H+, এক অণু FADH2 এবং এক অণু GTP(গুয়ানোসিন ট্রাইফসফেট) উৎপন্ন হয় (অর্থাৎ দুই অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে চার অণু Co2, 6 অণু NADH+H+,দুই অণু FADH2 এবং দুই অণু GTP উৎপন্ন হয়)।
  • ধাপ 4: ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র (Electron transport system) : উপরোক্ত তিনটি ধাপে যে NADH+H+ (বিজারিত NAD),FADH2 (বিজারিত FAD) উৎপন্ন হয়,এই ধাপে সেগুলো জারিত হয়ে ATP, পানি, উচ্চশক্তির ইলেকট্রন এবং প্রোটন উৎপন্ন হয়। উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রনগুলো ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্রের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় যে শক্তি প্রদান করে সেই শক্তি ATP তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র মাইটোকন্ড্রিয়ায় সংঘটিত হয়।

অবাত শ্বসন

যে শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে হয় তাকে অবাত শ্বসন বলে। অর্থাৎ যে শাসন প্রক্রিয়ায় কোন শাসনিক বস্তু অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই কোষের ভিতরকার এনজাইম দিয়ে আংশিক রূপে জড়িত হয়ে বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ ( ইথাইল অ্যালকোহল, ল্যাকটিক এসিড ইত্যাদি) কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে আবাত শ্বসন বলে। কেবলমাত্র কিছু অনুজীবে যেমন ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট ইত্যাদিতে অবাত শ্বসন হয়ে থাকে।

অবাত শ্বসনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

দুটি ধাপে অবাত শ্বসন হয়ে থাকে। ধাপ দুটি হলো:
  • ধাপ:1 : গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ: এই ধাপে এক অণু গ্লুকোজ থেকে দুই অনু পাইরুভিক এসিড, চার অণু ATP(এর মধ্যে দুই অণু ব্যবহার হয়ে থাকে) এবং দুই অণু NADH+H+ উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে এ পর্যন্ত বিক্রিয়া সবাত শ্বসনের গ্লাইকোলাইসিসের অনুরূপ।তবে উৎপন্ন পাইরুভিক এসিড পরবর্তী ধাপে বিজারিত হয়ে যায় বলে অবাত শ্বসন গ্লুকোজের অসম্পূর্ণ জারণ ঘটে- এমনটা বিবেচনা করা হয়।
  • ধাপ 2 : পাইরুভিক অ্যাসিডের বিজারণ: সাইটোপ্রজমে অবস্থিত এনজাইমের কার্যকারিতায় পাইরুভিক অ্যাসিড বিজারিত হয়ে CO2 এবং ইথাইল অ্যালকোহল অথবা শুধু ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে গ্লাইকোলাইসিস উৎপন্ন বিজারিত NAD (অর্থাৎ NADH+H+) জারিত হয়ে যে ইলেকট্রন, প্রোটন ও শক্তি নির্গত করে, তা ব্যবহৃত হয় পাইরুভিক অ্যাসিড থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বা ক্ষেত্রবিশেষে ইথাইল উৎপাদনের জন্য। অন্যদিকে অক্সিজেনের অভাবে তখন অক্রিডেটিভ ফসফোরাইলেসন ও চলে না। তাই অবাত শ্বসনের ক্ষেত্রে এক অণু গ্লুকোজের গ্লাইকোলাইসিসে নিট মাত্র 2 অণু ATP পাওয়া যায়।

শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রভাবক সমূহ

শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রভাবক গুলো বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ দু'রকম হতে পারে।

বাহ্যিক প্রভাবক

বাহ্যিক প্রভাবক গুলো হলো:
  • তাপমাত্রা: ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এবং ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরের তাপমাত্রায় শ্বসন হার কমে যায়। শ্বসনের জন্য উত্তম তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
  • অক্সিজেন: সবাত শ্বসনে পাইরুভিক এসিড জারিত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড ও পানি উৎপন্ন করে। কাজেই অক্সিজেনের অভাবে সবাত শ্বসন কোনোক্রমে চলতে পারে না।
  • পানি : পরিমিত পানি সরবরাহ শ্বসন ক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে। কিন্তু অত্যন্ত কম কিংবা অতিরিক্ত পানির উপস্থিতিতে শ্বসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
  • আলো : শ্বসন কার্যে আলোর প্রয়োজন পড়ে না সত্যি কিন্তু দিনের বেলা আলোর উপস্থিতিতে পত্ররন্ধ্র খোলা থাকায় অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করার সহজ হয় বলে শ্বসন হার একটু বেড়ে যায়।
  • কার্বন-ডাই-অক্সাইড: বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব বেড়ে গেলে শ্বসন হার একটুখানি কমে যায়।

অভ্যন্তরীণ প্রভাব 

অভ্যন্তরীণ প্রভাব গুলো হলো :
  • খাদ্যদ্রব্য: শ্বসন প্রক্রিয়ায় খাদ্যদ্রব্য (শ্বসনিক বস্তু) ভেঙ্গে শক্তি, পানি এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত করে, তাই কোষে খাদ্য দ্রব্যের পরিমাণ ও ধরন শ্বসন হার নিয়ন্ত্রণ করে।
  • উৎসেচক: শ্বসন প্রক্রিয়ায় অনেক ধরনের এনজাইম বা উৎসেচক সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। কাজেই এনজাইমের ঘাটতি শ্বসনের হার কমিয়ে দেয়।
  • কোষের বয়স: অল্প বয়স্ক কোষে, বিশেষ করে ভাজক কোষে প্রোটোপ্লাজম বেশি থাকে বলে সেখানে বয়স্ক কোষ থেকে শ্বসনের হার বেশি।
  • অজৈব লবন: কোন কোন লবণ শ্বসন প্রক্রিয়াতে ব্যাহত করলেও কোষের সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক কাজের জন্য এবং স্বাভাবিক শ্বসন প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য কোষের ভিতরে অজৈব লবন থাকতে হয়।
  • কোষ মধ্যস্থ পানি: বিভিন্ন শ্বসনিক বস্তু দ্রবীভূত করতে এবং এনজাইমের কার্যকারিতা প্রকাশের জন্য পানির প্রয়োজন।

শ্বসনের গুরুত্ব

শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি দিয়ে জীবের সব ধরনের ক্রিয়া বিক্রিয়া এবং কাজকর্ম পরিচালিত হয়। শ্বসনে নির্গত কার্বো-ডাই-অক্সাইড জীবের প্রধান খাদ্য শর্করা উৎপন্নের জন্য সালোকসংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। এ প্রক্রিয়া উদ্ভিদের খনিজ লবণ পরিশোষণের সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়া চালু রাখে। 

কোষ বিভাজনের প্রয়োজনীয় শক্তি ও কিছু আনুষাঙ্গিক পদার্থ শ্বসন প্রক্রিয়া থেকে আসে। তাই বলা যেতে পারে এ প্রক্রিয়া জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণ করে। এ প্রক্রিয়া বিভিন্ন উপক্ষার ও জৈব এসিড সৃষ্টিতে সহায়তা করার মাধ্যমে জীবনের অন্যান্য জৈবিক কাজে ও সহায়তা করে। কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বাঁচতে পারে না। 

এদের শক্তি উৎপাদনের একমাত্র উপায় হলো আবাত শ্বসন। এ প্রক্রিয়ায় ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি হয়। যা বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ল্যাকটিক এসিড ফার্মেন্ট্রেশন এর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ায় দই, পনির ইত্যাদি উৎপাদিত হয়। রুটি তৈরিতে এ প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়। ইস্টের অবাত শ্বসনের ফলে অ্যালকোহল এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়। এই কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের চাপের রুটি ফুলে গিয়ে ভিতরে ফাঁপা হয়।

লেখকের মন্তব্য

আশা করি পোস্ট টি থেকে আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। পোস্ট টি হতে কোনো উপকার পেলে বা পোস্ট টি ভালো লাগলে পরিচিত দের সাথে সেয়ার করুন। আর আপনার কোনো সমস্যা বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আর এমন পোস্ট পেতে অবশ্যই আমাদের গুগলে ফোলো করে রাখুন। 

কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এমন পোস্ট করে থাকি। যা আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি তে ভূমিকা রাখবে। আমরা আমাদের জন্য নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের আর্টিকেলে যদি কোন প্রকার ভুল থাকে তবে তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এর ফলে আমরা পরবর্তীতে সে ভুল সংশোধন করতে পারবো এবং আপনাদের নির্ভুল ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url