একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য | একজন ইমামের যেসকল যোগ্যতা থাকা অপরিহার্য

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য, একজন ইমামের যেসকল যোগ্যতা থাকা অপরিহার্য তা নিয়েই থাকছে আজকের আমাদের এই পোস্ট টি। আশা করি পোস্ট টি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন এবং একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে পারবেন।

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য

রাসূলুল্লাহ (সা:) ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য দোয়া করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, ইমাম হলেন জিম্মাদার আর মুয়াজ্জিন হলেন আমানদার। হে আল্লাহ আপনি ইমামদের সুপথে পরিচালিত করুন এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করে দিন। (আবু দাউদ, তিরমিযি)

ইমামতি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব। ইমামকে মানবতার পথপ্রদর্শক ও সরল পথের দিশারী হতে হবে। একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো দিগ্রান্ত মানুষকে সরল পথে পরিচালিত করতে এবং আল্লাহ সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতে। 

ইমাম শুধু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়িয়ে নিজেকে দায়িত্ব মুক্ত ভাবলে তা কখনো কাম্য নয়। মানুষ মানুষত্ব ও সমাজ নিয়েও একজন ইমামকে ভাবতে হবে। তাকে মানুষের সংশোধনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এটা একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য বা দায়িত্ব।

যদি মুসল্লিদের নামাজে ভুল ত্রুটি হয় তাহলে কিছু সময় বের করে তাদেরকে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা শেখাতে হবে। 

যারা কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত শিখেনি তাদেরকে কুরআন মাজীদ শেখার ব্যবস্থা করতে দিতে হবে। কুরআন মাজিদের অন্তত যতটুকু অংশ সঠিকভাবে তিলাওয়াত করতে জানলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা যাই এতোটুকু তেলাওয়াত শেখা ফরজ।

মুসল্লিদের ফরজ পরিমাণ কিরাত শুদ্ধ না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো নামাজের প্রতি অলস ও উদাসীনকে সচেতন করতে হবে, নামাজের গুরুত্ব বুঝাতে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। 

সমাজে কেউ শরীয়ত বিরোধী কাজ করলে ধীরে ধীরে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করারও একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য বা দায়িত্ব।

একজন ইমামের যেসকল যোগ্যতা থাকা অপরিহার্য

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো তিনি অবশ্যই আল্লাহ ভীরু হবেন। সকল মুসল্লীদের সাথে আদর্শ সুলব আচরণ করবেন। কাউকে ছোট করে বা অপমান জনক কথা বলবে না। ছোটদের ভালোবাসা দিবে এবং নামাজের প্রতি ভালোবাসা বারাতে সাহা করবে। 

তিনি নামাজ আদায়ের সময় সর্বোত্তম উপায়ে ও সতর্কতা অবলম্বন করবেন। এগুলোই মূলত একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য। নিচে একজন ইমামের যেসকল যোগ্যতা থাকা অপরিহার্য তা দেওয়া হলো
  • মুসলমান হওয়া
  • প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া
  • সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া
  • পুরুষ হওয়া
  • বিশুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করতে সক্ষম হওয়া ও নামাজের বিধি-বিধান সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকা
একজন ইমামের উপরোক্ত যোগ্যতা গুলো থাকা অপরিহার্য। নাহলে তাকে ইমাম বলে গণনা করা হবে না।

ইমামতের জন্য সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তি

উপস্থিত মুসল্লিগনের মধ্য যখন নির্ধারিত ইমান অথবা রাষ্ট্রপ্রধান কৃতক বর্ণ মৃত ব্যক্তিদের কেউ উপস্থিত না থাকেন, দহন নির্ম বর্ণিত ব্যক্তিগণ পর্যায়ক্রমে ইমামতের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।
  • যিনি নামাজের মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে বেশি জানেন তিনি ইমাম নির্বাচিত হবেন।
  • এগুনে সবাই সমান হলে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াতকারী ব্যক্তি ইমাম হবেন।
  • এক্ষেত্রেও সবাই সমান হলে যিনি সবচেয়ে বেশি খোদা ভীরু তিনি ঈমান হবেন।
  • এতেও যদি সমান হয় তাহলে যিনি বয়সে বড় তিনি ইমাম হবেন।
  • এতেও যদি সকলে সমান হন তাহলে উপস্থিত মুসল্লীগণের মতামতের ভিত্তিতে ঈমাম নির্বাচিত।
মূলত উপরোক্ত নিয়মানুযায়ী একজন ইমাম নির্বাচন করা উত্তম।

ইমামের দায়িত্ব পালনের নিয়ম

ইমাম নামাজ শুরু করার সময় মুসল্লিগণ কাতার সোজা করে দাঁড়াবেন। মুসল্লিগণ প্রতিটি ক্ষেত্রে ইমামকে অনুসরণ করবেন। অর্থাৎ ইমাম তাকবিরের তাহরীমা বাধার পর মুক্তাদিগণ তাকবীরে তাহরীমা বাঁধবেন। 

ইমাম রুকুতে যাওয়ার পর মুক্তাদীগণ রুকুতে যাবেন। কোন ক্ষেত্রে মুক্তাদি ঈমানের আগের রুকুর সিজদা বা কোনরকম আদায় করলে মুক্তাদীগণ এর নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

ইমামের পেছনের নামাজ আদায়ের সময় মুক্তাদির সূরা কিরাচত পড়বেন না। ইমাম তেলাওয়াতে ভুল করলে বা অন্য কোন ভুল করলে নিকটবর্তী মুক্তাদি সংশোধন করে দেবেন। কোন কারনে ইমামের নামাজ ভেঙ্গে গেলে মুক্তাদির ও নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 

তাই ইমামকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হয়। এটা একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য, তাকে সর্বদা সর্বোত্তম ও সতর্কতার সাথে নামাজ আদায় করতে হবে।

যদি ইমামের ওযু ভঙ্গ হয় তবে অন্য কাউকে ইমাম বানিয়ে পেছনে চলে আসতে হবে। নামাজে ইমাম বা মুক্তাদি কেউ ঘুমিয়ে পড়লে, বেহুশ হয়ে গেলে অথবা অট্টহাসি দিলে নতুন ভাবে অজু করে পুনরায় নামাজ পড়া শুরু করতে হবে। তাই ইমাম সর্বদা এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এটা একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য বা দায়িত্ব

সালাতুল ইশরাক

ইসরাগত উদয় প্রভাত বা সকাল। ইশরাকের নামাজ হলো প্রভাতের বা সকলের নামাজ। সূর্যোদয়ের পর যে সালাত আদায় করা হয় তাকে ইশরাকের নামাজ বলে। 

হাদিসে এ সালাতকে সালাতুল দোহাও বলা হয়। সালাতুল ইশরাক বা ইশরাকের নামাজ আদায় করা সুন্নত গায়রে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ আদায় করলে সওয়াব পাওয়া যায় আদায় না করলেও কোন গুনাহ হয় না।

সূর্যোদয়ের পর থেকে দ্বিপ্রহর পূর্ব পর্যন্ত এ সালাত আদায় করা যায়। তবে ওয়াক্তের শুরুতেই ইসরাকের নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম। 

ফরজ সালাত আদায়আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত নামাজের স্থানে বসে দোয়া দরুদ তাসবি পাঠ করে এরপর সূর্য পরিপূর্ণ উদয় হলে দুই রাকাত করে ৪-৬ বা আট রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়।

ইসরাকের নামাজের আগে দুনিয়ার কোন কার্যকর না করা উত্তম। কোন কার্যকর্ম করলেও সালাত আদায় করা যাবে, তবে তাদের সব কম হবে। 

যেহেতু সূর্যোদয়ের সময় নামাজ পড়া হারাম, তাই সূর্যোদয়ের সময় থেকে অত্যন্ত 15 থেকে 20 মিনিট দেরি করে ইসরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নামাজের জন্য দাঁড়ানো উচিত নয়। কারণ তাদের গুনাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইশরাকের নামাজ অনেক ফযিলত পূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ফযিলত সম্পর্কে বলেন, যে ব্যক্তি ফরজ নামাজ জামাতে আদায় করে তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে বসে থাকে এবং আল্লাহর জিকির করে তারপর দুই রাকাত সালাত আদায় করে সে একটি হজ ও একটি ওমরা এর সমান সাওয়াব পাবে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পূর্ণ সওয়াব কথাটি তিনবার বলেছেন। (তিরমিজি)

এ নামাজ আদায় কারীর সাগিরা গুনহা গুলো মাফ করে দেওয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবীগণ ও আল্লাহর প্রিয় বান্দা গন এ নামাজ আদায় করতেন। আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভ ও অধিক সওয়াব অর্জনের জন্য আমরা নিয়মিত ইশরাকের নামাজ আদায় করব। 

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো  নিজে এ নামাজ আদায় করবে এবং সকল মুসল্লীদের এ নামাজ পড়ার জন্য আহ্বান জানাবে

সালাতুল ইসতিসকা

ইসতিসকা অর্থ পানি বা বৃষ্টি প্রার্থনা করা। অনাবৃষ্টির সময় আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করে যে সালাত আদায় করা হয় তাকে ইস্তিস্কার নামাজ বলে। এ নামাজ সুন্নত। প্রিয় নবী (সাঃ) বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে বলতে

المعنى: اللهم اسقي عبادك ومواشيك. انزل نعمتك عليهم. جلب الأرض الميتة إلى الحياة

অর্থ:হে আল্লাহ তোমার বান্দা ও পশুপালকে পানি দান করো। তাদেরের প্রতি তোমার অনুগ্রহ বর্ষণ কর। মৃত জমিনকে জীবিত কর।

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য বা দায়িত্ব হলো অতিরিক্ত গরম পড়লে বা দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টি না হলে সকল মুসল্লীদের আহ্বান জানিয়ে সকলে একত্রে হয়ে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় করা।

ইসতিসকার নামাজ আদায়ের নিয়ম ও ফযিলত

সব বয়সী মুসলিম পুরুষেরা হেঁটে খোলা মাঠে একত্রিত হবে। গুনাহের কথা চিন্তা করে কাকুতি মিনতি করে আল্লাহ তাআলার নিকট তওবা করবে। 

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, রাসূল সা: খুবই সাদামাটা ভাবে বিনয় নম্রতা ও আকুতি সহ বাড়ি থেকে বের হয়ে (ইসতিসকা) নামাজের মাঠে উপস্থিত হতেন।(আবু দাউদ)

ইসতিসকার নামাজ দুই রাকাত এ নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এর জন্য কোন আজান বা ইকামত দিতে হয় না। একজন মুত্তাকী তথা আল্লাহ ভীরু ব্যক্তি ইমাম নিযুক্ত হবেন। ইমাম উচ্চস্বরে কিরাআত পড়বেন এবং সালাম ফিরিয়ে দুটি খুতবা দেবেন। 

এরপর সবাই মিলে কিবলামুখী হয়ে হাত প্রসারিত করে দোয়া করবে। এভাবে পরপর তিন দিন নামাজ পড়তে হয়। এই দিনগুলোতে রোজা রাখা এবং দান সদকা করা মুস্তাহাব। 

এর মধ্য বৃষ্টি শুরু হলেও তিনদিন পূর্ণ করা উত্তম। রাসুল (সাঃ) বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা ব্যতীত দোয়া করেছেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত রয়েছে একদিন রাসূল (সাঃ) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন।

এমন সময় এক মুড়বাসী বেদুইন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল পানির অভাবে ঘোড়া মরে যাচ্ছে ছাগল বকরি ও মরে যাচ্ছে। 

সুতরাং আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করুন। যাতে তিনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তখন রাসূল (সাঃ) নিজের দু'হাত প্রসারিত করলেন ও দোয়া করলেন। তার দুয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

বৃষ্টির নামাজে বিনয় নম্রতার সঙ্গে গমন করা সুন্নত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই যে যে বান্দার সব প্রয়োজন পূর্ণ করেন, এ বিশ্বাস অন্তরে জাগ্রত রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। তোমাদের জন্য তিনি মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।(সূরা নূহ,আয়াত ১০- ১১)

ধর্মীয় গুরুত্ব

নামাজ সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত ও দিন ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তর। একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো ধর্মীয় গুরুত্ব সম্পর্কে যথাযথ ধারণা থাকা এবং মুসল্লীদের মধ্যে খুতবার মাধ্যমে প্রচার করা। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সালাত কে দিনের খুঁটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। 

আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের নামাজের বিকল্প নেই। যারা নিয়মিত নামাজ আদায় করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন :

لقد نجح المؤمنون. الذين هم في صلاتهم خاشعون.

অর্থ: মুমিনরায় সফলকাম হয়েছে। যারা তাদের সালাতের বিনয়ী নম্র হয়। (সূরা আল মুমিনুন, আয়াত ১-২)

সালাত আল্লাহ তাআলা এবং বান্দার মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করে। ব্যক্তির অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে সালাত প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে শৃঙ্খলিত হয় এবং সুসংগঠিত জীবনের অভ্যস্ত করে তোলে। সালাদের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন,

إذا صلّى الإنسان صلاته الصحيحة، كانت الصلاة نوراً ووثيقة ونجاة له يوم القيامة

অর্থ : যে ব্যক্তি যথাযথভাবে নামাজ আদায় করে, নামাজ তার জন্য কিয়ামতের দিন জ্যোতি, দলিল এবং মুক্তির উপায় হবে।

আল্লাহ তাআলা ব্যক্তির একনিষ্ঠ ইবাদতকে গ্রহণ করেন। একাগ্রতার সঙ্গে সালাত আদায় করলে ব্যক্তির গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। 

প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, ফরজ নামাজের সময় হলে যে ব্যক্তি উত্তর রূপে অজু করে একাগ্রতার সাথে রুকু সিজদা আদায় করে নামাজ পড়ল, তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যতক্ষণ না সে কোন কবিরা গুনাহ করে এবং তার জীবনে এমনটি চলতে থাকবে।

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতে আদায় করা প্রত্যক্ষ মুসলিমের ওপর আবশ্যক। জামাতে সালাত আদায় করলে একাকী আদায় চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। 

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় মসজিদে যায় অর্থাৎ যে আমাদের সালাত আদায় করে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে অতিথির তার আয়োজন করেন। যতবার সে সকাল সন্ধ্যায় যায় ততবারই। (বুখারী ও মুসলিম)

বিচার দিবসের প্রথম যে বিষয়ের হিসাব নেয়া হবে তা হলো নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন সর্বপ্রথম বান্দার যে বিষয়ের হিসাব নেওয়া হবে তা হল সালাত

ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করা যাবে না। মহানবী সাল্লাল্লাহু ইসলাম বলেন,

والفرق بين العبودية والشرك والكفر هو ترك الصلاة.

অর্থ : বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্য পার্থক্য হচ্ছে নামাজ পরিত্যাগ করা।

সামাজিক গুরুত্ব

সালাতের সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। সালাত সমাজের ঐক্য শান্তির শৃঙ্খলা ও ব্রাহ্মণিত প্রতিষ্ঠা করে।  একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য হলো তিনি সকল মুসল্লীদের সমান চোখে দেখবে এবং সাথে ভালো ও সুন্দর আরচণ হওয়া । 

জামাতে ধনী-গরীব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাই একই সারিতে দাঁড়িয়ে ওই বীজ বপন করে সামান্য প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু করো। (সূরা আল বাকারা আয়া ৪৩)

সালাতের মাধ্যমে দৈনিক পাঁচবার একে অপরের খোঁজখবর নেওয়া সুযোগ হয়। এর মাধ্যমে সমাজের সোহাদ্য সম্প্রীতি বারে। 

সালাদের অনুশীলন মানুষকে নিও মানবতা শিখায়। এতে সমাজের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হয়। নামাজ আদায়ের জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া পূর্ব সত্তা। ফল স্বপ্নরূপ মানুষ পরিচ্ছন্ন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়।

ধৈর্যশীলতা সালাতের অন্যতম শিক্ষা। সালাদের সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুসরণ করে মানুষ ধৈর্য্যধারণের পারদর্শী হয়ে ওঠে। এজন্য আল্লাহ তায়ালা বলেন,

يا أيها الذين آمنوا استعينوا بالصلاة والصبر

অর্থ : হে ঈমানদারগণ, তোমরা সালাত এবং ধৈর্যের দ্বারা সাহায্য প্রার্থনা করো।(সূরা আল বাকারা আয়াত ১৫৩)

সালাত অভ্যস্ত ব্যক্তির যাবতীয় অশ্লীলতা এবং পাপাচার থেকে মুক্ত থাকে। সালাত মানুষকে পূর্ণ কার্যে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন

:إن الصلاة تنهى عن الفحشاء والمنكر

অর্থ : নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।(সূরা আল আনকাবুত, আয়াত ৪৫)

লেখকের মন্তব্য

একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য কী এবং একজন ইমামের যেসকল যোগ্যতা থাকা অপরিহার্য তা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন। একজন ইমামের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমরা যথাযথ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কোন ভুলক্রুটি থাকলে তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন যেন আমরা পরবর্তী তে তা সংশোধন করতে পারি।

আশা করি পোস্ট টি থেকে আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। পোস্ট টি হতে কোনো উপকার পেলে বা পোস্ট টি ভালো লাগলে পরিচিত দের সাথে সেয়ার করুন। আর আপনার কোনো সমস্যা বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আর এমন পোস্ট পেতে অবশ্যই আমাদের গুগলে ফোলো করে রাখুন। 

কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এমন পোস্ট করে থাকি। যা আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি তে ভূমিকা রাখবে। আমরা আমাদের জন্য নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের আর্টিকেলে যদি কোন প্রকার ভুল থাকে তবে তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এর ফলে আমরা পরবর্তীতে সে ভুল সংশোধন করতে পারবো এবং আপনাদের নির্ভুল ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url