গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!
গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে থাকছে আজকের পোস্ট। তো আপনি যদি গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের পোস্ট টি পড়ুন।
গর্ভবতী মহিলারা হাঁসের ডিম খেতে পারবে কারণ এতে পাওয়া যায় ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং ভাল পরিমাণ ফ্যাট থাকে।গর্ভাবস্থায় হাঁসের ডিম গর্ভস্থ শিশু এবং মায়ের জন্য সব প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুন সরবরাহ করে।
গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। ডিম প্রায় সকলের পছন্দের একটা খাবার। এছাড়াও এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর এবং উপকারী হয়ে থাকে। হাঁসের ডিমও তেমন। এজন্য অনেক গর্ভবতী মহিলারা হাঁসের ডিম খেয়ে থাকে।
তবে তাদের অনেকেই গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানে না। তাদের উদ্দেশ্যে মূলত আজকের এই পোস্ট। অতএব পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়লে আপনারা গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা
উচ্চ মাত্রায় প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো ডিম। গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিক থেকেই ডিম গর্ভবতী মহিলার ডায়েটে পুষ্টি সরবরাহ করে। এছাড়াও ডিমে প্রচুর মাত্রায় কোলিন, ফ্যাট এবং খনিজ পদার্থ থাকায় গর্ভবতী মহিলাদের জন্য দারুন খাবার।
ডিমের মধ্যে, গর্ভাবস্থায় অপরিহার্য, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ডি কমপ্লেক্স পাওয়া যায় বলে ডিমের এই সমস্ত উপাদানগুলো গর্ভাবস্থায় খুবই স্বাস্থ্যকর সুবিধা প্রদান করে।ডিম ভ্রূণ বিকাশে সহায়তা করে থাকে
গর্ভাবস্থায় ডিম খাওয়া খুবই ভাল কারণ এটি ভ্রূণের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু বিকাশে সহায়তা করে থাকে। শিশুর বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে থাকে। ডিমের মধ্যে থেকে অসংখ্য উপকারী এবং উপযুক্ত পুষ্টির মধ্যে কোলিন অন্যতম।
ডিম শরীরের কোষ মেরামত করে থাকে
গর্ভবস্থায় মহিলারা খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে বা তাদের বিভিন্ন অসুস্থতার প্রবণতা দেখা দেয়। শরীরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে গর্ভবতী মহিলার গর্ভস্থ ভ্রূণের বৃদ্ধি ব্যহত হতে পারে । গর্ভাবস্থায় সিদ্ধ ডিম খাওয়া পুষ্টিগুণ পাওয়ার অত্যন্ত সহজ উপায়।
ডিম শিশুর নিউরাল টিউবের অস্বাভাবিকতার সম্ভাবনা হ্রাস করে থাকে
অনেক গবেষণায় দেখা যায় যে ৭২% বা তার থেকেও কিছু কম সংখ্যক নবজাত শিশুর মধ্যে ভ্রূণ বা জন্মগত অস্বাভাবিকতার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে কোলিনের ঘাটতির হওয়ার ফলে এটা ঘটে থাকে। গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে ডিম খেলে এই ধরনের সমস্যা প্রতিরোধের জন্য দূর্দান্ত উপায়।
ডিম গর্ভবতী মহিলাদের উদ্বেগ ও হতাশা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে থাকে
গর্ভবস্থায় মহিলারা খুব বেশি পরিমাণ উদ্বেগ এবং হতাশা অনুভব করে থাকে। তাই তারা কোলিনযুক্ত ডিম খেলে শরীরে DNA এবং হরমোনের কার্যকারিতার উপর প্রভাব ফেলে। যেসব গর্ভবতী মহিলারা অধিক পরিমাণ কোলিন গ্রহণ করে তারা নিজেদের ভ্রূণের বিকাশের ক্ষেত্রেও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত পরিবর্তন দেখতে পাই।
ডিম খেলে অসুস্থ অবস্থায় শিশু জন্মের সম্ভাবনা কমে যায়
নবজাতক শিশুর পক্ষে অসুস্থতা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ জন্মের পরে, শিশুকে আবার নিজের পারিপার্শ্বিকের অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে হয়। হবু মায়ের কোলিন গ্রহণ শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে থাকে কারণ এর সাহায্যে শিশুরা গর্ভত্যাগ করার পরে কোনও বাধা বা অসুস্থতা দ্বারা কম প্রভাবিত হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় ডিম বাছাই ও রান্না করার পদ্ধতি
- পাস্তুরাইজড ডিম কিনতে হবে । ডিম দিয়ে তৈরি কোনও খাবার কেনার সময়, সেগুলো পাস্তুরাইজড ডিম দিয়ে বানানো কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য লেবেল পরীক্ষা করতে হবে।
- ঠাণ্ডা ডিম বেছে নিতে হবে ।
- ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার থেকে কম তাপমাত্রায় ডিম ফ্রিজে রাখতে হবে । নরমাল তাপমাত্রায় ডিম রাখলে তা বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- কাঁচা ডিমের সংস্পর্শে আসা হতে বিরত থাকতে হবে এবং নিজের হাত পরিষ্কার করতে হবে ।
- ডিমের খোসা নোংরা বা ফাটা হলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- ডিম অন্যান্য খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অন্য কোনও কিছুর সাথে একই পাত্রে রাখা যাবে না।
- তাজা ডিম কিনতে হবে । ডিম তাজা আছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য এক বাটি জলে ডিমটি রাখতে হবে ডিম যদি ভাসে উঠে তাহলে সেটি তাজা নয়। ডুবে গেলে তাজা বলে ধরে নিতে হবে।
- পাস্তুরাইজড ডিম কিনতে হবে । ডিম দিয়ে তৈরি কোনও খাবার কেনার সময়, সেগুলো পাস্তুরাইজড ডিম দিয়ে বানানো কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য লেবেল পরীক্ষা করতে হবে।
- ঠাণ্ডা ডিম বেছে নিতে হবে ।
- ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার থেকে কম তাপমাত্রায় ডিম ফ্রিজে রাখতে হবে । নরমাল তাপমাত্রায় ডিম রাখলে তা বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- কাঁচা ডিমের সংস্পর্শে আসা হতে বিরত থাকতে হবে এবং নিজের হাত পরিষ্কার করতে হবে ।
- ডিমের খোসা নোংরা বা ফাটা হলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- ডিম অন্যান্য খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অন্য কোনও কিছুর সাথে একই পাত্রে রাখা যাবে না।
- তাজা ডিম কিনতে হবে । ডিম তাজা আছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য এক বাটি জলে ডিমটি রাখতে হবে ডিম যদি ভাসে উঠে তাহলে সেটি তাজা নয়। ডুবে গেলে তাজা বলে ধরে নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা কয়টি ডিম খেতে পারবে
গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মহিলার কোলেস্টেরলের মাত্রার উপর নির্ভর করে তার প্রতিদিন প্রস্তাবিত ডিম খাওয়ার রেঞ্জ ১টি থেকে ২টি। একটি ডিমে প্রায় 185 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে এবং শরীরের দৈনিক প্রয়োজন 300 মিলিগ্রাম। তাই গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা কুসুম খেতে পারবে তবে সেটা কোনভাবে কাঁচা হবে না; সঠিক উপায়ে রান্না করা অবশ্যই জরুরি।
গর্ভাবস্থায় মহিলারা কি হাঁসের ডিম খেতে পারবে
হ্যাঁ পারবে, গর্ভাবস্থায় ডিম খাওয়া ভাল, কিন্তু সেগুলোকে সঠিক উপায়ে রান্না বা পাস্তুরাইজ করতে হবে।
কম সিদ্ধ ডিম বা কাঁচা ডিমে প্যাথোজেন থাকতে পারে, যেমন :ফুড পয়জনিং-সৃষ্টিকারী সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া। গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িকভাবে কম থাকে বলে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে খাদ্যজনিত অসুস্থতার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
সালমোনেলা সংক্রমণের কারণে প্রচণ্ড জ্বর, বমি, ডায়রিয়া এবং ডিহাইড্রেশন মতো লক্ষণও দেখা যায় । এই লক্ষণগুলো বেশি মাত্রায় থাকলে গুরুতর পরিস্থিতিতে অকাল প্রসব বা গর্ভপাতও হতে পারে।
হাঁসের ডিমের পুষ্টিগুনাবলী
- ক্যালোরি - ১৩০
- প্রোটিন - ৯ গ্রাম
- চর্বি - ১০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট - ১ গ্রাম
- ফাইবার - ০
- চিনি - ১ গ্রাম
- ফসফরাস - ১৪৪ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম -১৪৬ মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম - ১৮৬ মিলিগ্রাম
হাঁসের ডিমের অপকারিতা
হাঁসের ডিমে কিছু অপকারিতা রয়েছে নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো —
উচ্চ কোলেস্টেরল : হাঁসের ডিমে মুরগির ডিমের চাইতে বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে যা হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেহেতু ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে তাই কুসুম বাদ দিয়ে শুধু ডিমের সাদা অংশ হার্টের রোগীরা খেতে পারবে।
এলার্জি : অনেকের হাঁসের ডিমে এলার্জি দেখা যায় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি হয়। হাঁসের ডিম খাওয়ার পর এলার্জি দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বমি বমি ভাব : অতিরিক্ত হাঁসের ডিম খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব আসতে পারে বা ডায়রিয়ার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া : স্যালমোনেলা হল এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা বিশেষ করে মুরগির বা হাঁসের ডিমে দেখা যায়। এর ফলে ডায়রিয়া বা জ্বর হতে পারে। তাই হাঁসের ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং অধিক সময় ধরে রান্না করতে হবে।
গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত পোস্ট এই পর্যন্তই ছিল। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এরপরও যদি গর্ভবস্থায় হাঁসের ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে পারেন। আমরা তার উত্তর দেওয়ার সম্পূর্ণ চেষ্টা করবো।
ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;
comment url