কচু শাক কেন খাবেন? এর পুষ্টিগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!
কচু শাক কেন খাবেন? এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে থাকছে আজকের আমাদের এই পোস্ট। কচু শাক কেন খাবেন? এর উপকারিতা কি? আপনি যদি জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কচু শাক কেন খাবেন?
আচ্ছা আমি যদি আপনাদের বলি আপনারা কচু শাক কেন খাবেন? তাহলে আপনাদের উত্তর কি হবে? অবশ্যই আপনি এটার উপকারিতা পাওয়ার জন্যই খাবেন। তবে অনেকেই জানে না কচু শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
কচু শাকে রয়েছে ভিটামিন 'এ' যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত উপকারী। তাছাড়া কচু শাকে অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকরা কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
কচু শাক বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। তারমধ্যে কচু-পাতার ভর্তা ও তরকারিতে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ইলিশ, চিংড়ি, ছোট মাছ বা শুটকি মাছ দিয়ে কচু শাকের তরকারি বেশ জনপ্রিয়। কচুশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
মানুষের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কচু শাকে ভিটামিন এ -এর পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন বি এবং সি-ও। এছাড়া কচু শাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর সমাদর অনেক বেশি।
এই কচু শাকই দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে। কচু শাকের উপকারিতা প্রচুর হওয়ার অনেক ডাক্তার কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
কচু শাকের পুষ্টিগুণ
কচু শাকের পুষ্টি উপাদান বেশি থাকায় সব বয়সের মানুষ খেতে পারে। কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান সমূহ। নিচে কচু শাকের পুষ্টি উপাদান আলোচনা করা হলো-
প্রতি ১ গ্রাম কচু শাকে থাকে, শর্করা-০.০৬৮ গ্রাম, প্রোটিন- ০.০৩৯ গ্রাম, লৌহ-০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১- ০.০০২২মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২- ০.০০২৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’-০.১২ মিলিগ্রাম, স্নেহ বা চর্বি-০.০১৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ২.২৭ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি-০.৫৬ কিলোক্যালরি।
কচু শাকের উপকারিতা
কচু শাক কেন খাবেন? এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে থাকছে আজকের আমাদের এই পোস্ট। কচু শাক কেন খাবেন? এর উপকারিতা কি? আপনি যদি জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্ট টি সম্পূর্ণ পড়ুন। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
কচু শাকের উপকারিতা অনেক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো :-
- কচু শাকে এমন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনে সহায়তা করে
- কচু শাকে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা দূর করে। তাই রক্তশূন্যতা থেকে বাঁচতে অবশ্যই কচু শাক খাওয়া উচিত।
- কচু শাক হজমের জন্য বেশ উপকারি। কচু শাকে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- কচু শাকে ভিটামিন সি থাকার ফলে এটি শরীরের ক্ষত নিয়াময় করতে সহায়তা করে। এই শাক শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার খাওয়া উত্তম।
- কচু শাক চোখের জন্য বেশ উপকারি। কেননা এই শাক খেলে রাতকানা রোগসহ চোখে ছানি পড়া রোধ করে।
- উচ্চরক্তচাপ রোগীদের জন্য কচু শাক একটি বিশেষ শাক হতে পারে। কেননা এই শাকে এমন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে এই শাক নিয়মিত খান।
- কচু শাক গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুর জন্যও বেশ উপকারি। কেননা এতে নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকে যা তাদের জন্য উপকারি হয়ে থাকে। এটি সহজলভ্য হয়ে থাকে ফলে যেকেউই এটা খেতে পারে এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে।
- কচু শাকের আরও একটি আশ্চর্যজনক উপকারিতা হলো এটি আমাদের শরীরে অক্সিজেন এর সরবরাহ সচল রাখতে বিশেষভাবে ভুমিকা পালন করে।
- কচু শাকে উপস্থিত ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে।
কচু শাকে কোন উপাদান বেশি থাকে
প্রতি ১৫০ গ্রাম কচু শাকে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান-
- ক্যালোরি- ৩৫ গ্রাম
- প্রোটিন- ৪গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট- ৬গ্রাম
- ফাইবার- ৩গ্রাম
- চর্ব-১ গ্রাম
- ভিটামিন সি- ৫৭%
- ভিটামিন - ৩৪%
- ফোলেট- ১৭%
- পটাসিয়াম- ১৪%
- ক্যালসিয়াম- ১৩%
- আয়রন- ১০%
গর্ভাবস্থায় কচু শাকের উপকারিতা
গর্ভকালীন সময়ে এবং সন্তান প্রসবের পর কচু শাক খাওয়ার একাধিক উপকারিতা রয়েছে। যেমন-
- অনেক সময় মাতৃ স্তনে শিশুর আহারের জন্য পর্যাপ্ত দুগ্ধের ঘাটতি দেখা যায়। এক্ষেত্রে পরপর তিন থেকে চার দিন কচু শাক খেলে মাতৃ স্তনে দুগ্ধের পরিমান বৃদ্ধি পায়।
- গর্ভাবস্থায় শরীরে প্রচুর পুষ্টির প্রয়োজন হয়, অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের মহিলারা প্রোটিন ড্রিঙ্ক ও ভিটামিন ক্যাপসুলের পরিবর্তে কচু শাক গ্রহন করতে পারেন।
- কচুশাকে ক্যালশিয়াম থাকার জন্য গর্ভাবস্থায় কচুশাক খেলে সন্তানের হাড়ের বৃদ্ধি সুগঠিত হয়।
কচু শাক খাওয়ার আরও সব উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
- ডাক্তাররা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী
- জন্য উপকারী
- হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে উপকারী
- ক্যান্সার রোগীদের জন্য উপকারী
- উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য উপকারী
- বলিরেখা দূর করতে
- জয়েন্টের ব্যথায় উপকারী
- কচুশাক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ওজন কমাতেও কচু শাক খুবই কার্যকরী।
- পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখে
কচু শাক কেন খাবেন? এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কিত পোস্ট এই পর্যন্ত ছিল। আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন কচু শাক কেন খাবেন? এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। তবুও এ সম্পর্কে কোন জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমরা তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;
comment url