ট্যাংরা মাছের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নিন
মাছ বাঙালির অনেক প্রিয় একটি খাবার। এজন্য বলা হয়ে থাকে মাছে ভাতে বাঙালি। তবে সেটি যদি হয় ট্যাংরা মাছ তাহলে আর কোন কথায় নেই। কেননা এই মাছ যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। ট্যাংরা মাছে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ট্যাংরা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে।
ট্যাংরা মাছের উপকারিতা
স্বাদে ও গুণে ভরপুর ট্যাংরা মাছের উপকারিতা অনেক। ট্যাংরা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনারা অবাক হবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ট্যাংরা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে।
ট্যাংরা মাছ মিঠা পানির মাছ। আমাদের সকলের জানা মিঠা পানির মাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। আর মাছ টি যদি ট্যাংরা হয় তাহলে আর কোন কথায় নেই। কেননা ট্যাংরা মাছের যেমন রয়েছে পুষ্টিগুণ তেমনি খেতে সুস্বাদু।
ট্যাংরা মাছ অপছন্দ করে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্যাংরা মাছ খেলে শরীরে কোলাজেন বৃদ্ধি পায়। আর কোলাজেন ত্বক এবং চুল দুটির জন্যই ভালো। অতএব ট্যাংরা মাছ খেলে ত্বক ও চুল দুটোই ভালো থাকবে।
ট্যাংরা মাছ যেহেতু ছোট মাছ, স্বাভাবিক ভাবে এটি চোখের জন্য বেশ উপকারি। ট্যাংরা মাছ খেলে চোখ ভালো থাকে, রেটিনা সুস্থ থাকে এবং চোখের শুষ্কতা দূর করে। এছাড়াও ট্যাংরা মাছে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ট্যাংরা মাছে রয়েছে বিরল ওমেগা -৩ এসিড, যা আমাদের হৃদয়কে সুস্থ রাখে। তাছাড়াও ট্যাংরা মাছ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। এটি আর্থ্রাইটিসও নিরাময় করে।
ট্যাংরা মাছে যেসব পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে
ট্যাংরা মিঠা পানির মাছ ও খেতে অনেক সুস্বাদু হওয়ায় প্রায় সকল মানুষ এই মাছটি খেতে পছন্দ করে। এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। চলুন জেনে নিই ট্যাংরা মাছের পুষ্টিগুণ গুলো :-
প্রতি ১০০ গ্রাম ট্যাংরা মাছ থেকে প্রায় ১০৬ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও ১৯.২ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৫ গ্রাম চর্বি ও ২৭০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এই মাছ খেলে আরও পাওয়া যায় ওমেগা -৩ ফ্যাট অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। ট্যাংরা মাছ খেলে চোখ ভালো থাকে।
ট্যাংরা মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও জিংক রয়েছে, যার ফলে হাড় ও দাঁত ভালো রাখতে ভীষণ উপকারি। এছাড়াও ট্যাংরা মাছ খেলে হার্ট ভালো থাকে। কেননা এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। এছাড়াও ট্যাংরা মাছ খেলে আরও উপকারিতা পাওয়া যায়।
ট্যাংরা মাছ খেলে কি হয়?
ট্যাংরা মাছ খেতে যেমন সুস্বাদু তেমন তার পুষ্টিগুণ। ট্যাংরা মাছ মিঠা পানির হওয়ায় এর তেমন ক্ষতিকর দিক নেই। চলুন জেনে নিই ট্যাংরা মাছ খেলে কি হয়:-
- ট্যাংরা মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
- ট্যাংরা মাছ খেলে হার্ট ভালো থাকে।
- ট্যাংরা মাছ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- ট্যাংরা মাছ খেলে শরীরে কোলাজেন বৃদ্ধি পায়।
- দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে। এজন্য অনেক চিকিৎসক যাদের চোখের সমস্যা তাদের এই মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
- প্রতিদিন ট্যাংরা মাছ খেলে আর্থারাইটিস ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
ট্যাংরা মাছ কত প্রকার ও কি কি?
মোট ৫ ধরনের ট্যাংরা মাছ পাওয়া যায়। সেগুলো হলো ১. বজরি ট্যাংরা, ২. কাবাশী ট্যাংরা, ৩. কোশী ট্যাংরা, ৪. গুলশা ট্যাংরা ও ৫. গুলি ট্যাংরা।
ট্যাংরা মাছের বৈশিষ্ট্য
ট্যাংরা মাছের বৈশিষ্ট্য গুলো হলো:-
- ট্যাংরা মাছ আকারে ছোট হয়।
- মাথায় দুই জোড়া গোঁফ থাকে।
- দেহ প্রায় গোলাকার হয়ে থাকে।
- দেহে কোনো আঁশ থাকে না।
- দেহ ত্বক পিচ্ছিল হয়ে থাকে। আত্মরক্ষার জন্য ফুলকার দুই পাশে ও পিঠে একটি সরু কাঁটা থাকে।
- পিঠের উপরের অংশ কালচে ও পেটের নিচের দিক সাদা হয়ে থাকে।
- এরা মূলত মাংসাশী মাছ।
- বাসস্থান: এরা মিঠা পানির মাছ।
- প্রজনন: এরা ৩ মাস বয়সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যায়। মে মাসের শেষের দিকে এ মাছ পেটে ডিম ধারণ করে এবং ১ মাস পর ডিম ছেড়ে দেয়।
ট্যাংরা মাছে কি এলার্জি আছে
আপনাদের আগে এটা জানা প্রয়োজন আসলে এলার্জি কি?
দেখুন, মানুষের শরীরে এক একটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম রয়েছে। এটা হচ্ছে মূলত শরীরের নিজস্ব এন্টিবডি তৈরির ক্ষমতা, যা শরীরের নতুন কোন আমিষ ঢোকার পরে তৈরি হয়। কোন কারণে এই ইমিউন সিস্টেমে গণ্ডগোল দেখা দিলে আমাদের শরীরে এলার্জির বহির্প্রকাশ ঘটে।
কখনও কখনও আমাদের শরীর ক্ষতিকর নয় এমন বস্তকে ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধ করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন বস্তর ওপর শরীরের এমন অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই হলো এলার্জি। এজন্য একেক জনের একেক জিনিসে এলার্জি হয়ে থাকে।
যার শরীর যে বস্তকে ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধ করে তা তাতেই এলার্জি হয়। অতএব আপনার ট্যাংরা মাছে এলার্জি আছে কিনা এটা আমাদের দ্বারা বলা সম্ভব নয়। এটা আপনার শরীরের ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত ট্যাংরা মাছে এলার্জি নেই।
আরও পড়ুনঃ পুঁটি মাছের উপকারিতা
লেখকের মন্তব্য
আশা করি পোস্ট টি থেকে আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। পোস্ট টি হতে কোনো উপকার পেলে বা পোস্ট টি ভালো লাগলে পরিচিত দের সাথে সেয়ার করুন। আর আপনার কোনো সমস্যা বা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আর এমন পোস্ট পেতে অবশ্যই আমাদের গুগলে ফোলো করে রাখুন।
কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এমন পোস্ট করে থাকি। যা আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি তে ভূমিকা রাখবে। আমরা আমাদের জন্য নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের আর্টিকেলে যদি কোন প্রকার ভুল থাকে তবে তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এর ফলে আমরা পরবর্তীতে সে ভুল সংশোধন করতে পারবো এবং আপনাদের নির্ভুল ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারবো।
ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;
comment url