এক নজরে মদিনা সনদে উল্লেখিত উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় সমূহ

৬২২ খ্রিস্টাব্দে ২৪ শে সেপ্টেম্বর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনা নগরীতে হিজরত করেন। এ সময় সেখানে বসবাসরত বনু আওস এবং বনু খাজরাজ সম্প্রদায় দুটির মধ্যে ছিল গোষ্ঠীগত হিংসা-বিদ্বেষ। 

তাই কলহে লিপ্ত এ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যম ভ্রাতিত্ব সম্প্রীতি স্থাপন ও মদিনায় বসবাসরত সকল গোত্রের মধ্যে সুশাসন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪৭ ধারার একটি সনদ সংবিধান প্রণয়ন করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে মদিনা সনদ নামে পরিচিত।

মদিনা সনদে উল্লেখিত উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় সমূহ :

  • সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ একটি জাতি গঠন করবে।
  • যুদ্ধ বা হানাহানি শুরু করার মত তীব্র বিরোধ তৈরি হলে বিষয়টি আল্লাহ এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে ম্যাচ তো ন্যস্ত হবে।
  • কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদিনা বা মদিনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোন রূপ সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারবে না।
  • মুসলিম, খ্রিষ্টান, ইহুদি, পৌত্তলিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মের ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
  • মদিনার উপর যে কোন বহিরাক্রমণকে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ বলে গণ্য করতে হবে এবং সে আক্রমণকে প্রতিরোধ করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে একজোট হয়ে অগ্রসর হতে হবে।
  • অমুসলিমগণ মুসলিমদের ধর্মীয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে না।
  • রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের অধিকার নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
  • অসহায় ও দুর্বলকে সর্বাবস্থায় সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।
  • সকল প্রকার রক্তক্ষয়, হত্যা বলাৎকার নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মদীনাকে পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হবে।
  • কোন লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে বিচার করা হবে, তার কারণে অপরাধীর সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
  • মুসলমান, ইহুদি ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরস্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে।
  • রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনি হবেন বিচারালয়ের সর্বোচ্চ বিচারক।
  • হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুমতি ব্যতীত মদিনাবাসীগণ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।
  • মুসলমানদের কেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথাচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, নিজ সন্তান বা আত্মীয় হলেও এ ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়াতপ্রাপ্তির পর মানবজাতির মধ্যে শান্তি, শৃঙ্খলা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সর্বশ্রেষ্ঠ কর্ম হচ্ছে মদিনা সনদ বা একটি সংবিধান প্রণয়ন। এ সংবিধান পৃথিবীর সর্বপ্রথম লিখিত একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় সংবিধান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগারের জিহাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন;

comment url